- স্টাফ রিপোর্টার
ঈদ উদযাপন করতে এক শ্রেণির কিশোরেরা ট্রাক এবং পিকআপে করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পদ্মাসেতুর এপ্রোচ সড়ক থেকে শুরু করে এক্সপ্রেসওয়েতে। ঈদের দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অসংখ্য ট্রাক আর পিকআপে করে এই কিশোরদের ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। উচ্চ স্বরে গান-বাজনা বাজানোর তালে উচ্ছৃঙ্খল লাফঝাপ আর চিৎকার-চেঁচামেচি চলতে থাকে গাড়ি চলার সাথে সাথে। কিশোর শ্রেনির এই ঈদ বিনোদনকে 'অসুস্থ বিনোদন' বিনোদন বলে উল্লেখ করছেন সচেতনমহল। একই সাথে পারিবারিক সচেতনতা না থাকায় কিশোর শ্রেনির দিন দিন বিপথগামী হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা। ঈদ বিনোদনের নামে খোলা ট্রাক এবং পিকআপে করে চলন্ত অবস্থায় নাচানাচির ফলে যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় কোন দূর্ঘটনাও। মহাসড়কে চলাচলকারী পরিবহন চালকেরা এমনটাই জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরেই দেখা গেছে ঈদের দিন থেকে শুরু করে দুই/তিন দিন পর্যন্ত পদ্মা সেতুর এ্যাপ্রোচ সড়ক থেকে শুরু করে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রাক, পিকআপে করে এক শ্রেণির কিশোর,তরুনেরা উল্লাস করে বেড়া। ট্রাকে জেনারেটর নিয়ে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে নাচানাচি করছে। গাড়ির চলন্ত অবস্থায় ট্রাক-পিকআপে লাফালাফি করে এই তরুণেরা। বুধবার(৪ মে) সকাল থেকেও এভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে তরুণদের।
এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চর সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান,'ঈদের দিন নামাজের পর থেকে রাত পর্যন্ত উচ্চস্বরে গান-বাজনা বাজিয়ে ট্রাক নিয়ে সড়ক দাপিয়ে বেড়ায় কিশোর শ্রেনি। রাস্তাঘাটে মেয়েদের দেখলে বাজে শব্দ আর অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে। অসভ্যতা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।'
মাইক্রোবাস চালক মো.আবু রায়হান বলেন,'মহাসড়কে এইভাবে ট্রাক নিয়ে গানবাজনা বাজিয়ে কিশোর শ্রেণির ঈদ বিনোদনের নামে দাপিয়ে বেড়ানোর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। যা অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে করে যেকোন সময় দূর্ঘটনায় প্রাণহানিও ঘটতে পারে। তাছাড়া ট্রাকে নাচানাচির সাথে মাদক সেবন করতেও দেখা গেছে।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় কলেজ শিক্ষক তাজুল ইসলাম বলেন,'শুধু মহাসড়কই নয়,গ্রামের সড়ক দিয়েও এই 'ডিজে পার্টি'র দলের ট্রাক,পিকআপ ঘুরে বেড়াচ্ছে। এভাবে ঈদ বিনোদন একটা অসুস্থ্যতা। এভাবে গাড়িতে করে হইহুল্লোর করছে, ধুমপান করছে। অশ্লীল ভঙ্গিমা করে চেঁচামেচি করছে যা নৈতিক অবক্ষয় ঘটাচ্ছে। এগুলো বন্ধে সামাজিক ভাবেও এগিয়ে আসা উচিত। আর মহাসড়কে অবাধে ঘুরে বেড়ানো বন্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা গ্রহন কাম্য। যেকোন সময় দূর্ঘটনাও ঘটতে পারে।'
শিবচর হাইওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. বাকী বলেন,'আমাদের হাইওয়ে পুলিশের চেকপোষ্ট রয়েছে মহাসড়কে। ঈদের দিন যেসকল ট্রাকে করে এভাবে ছেলেরা এসেছে তাদের সাময়িক সময় আটকে রেখে মহাসড়ক ত্যাগ করতে পরামর্শ দেয়া হয়। মহাসড়কে ট্রাক বা পিকআপে লোকজন বহন করাই নিষিদ্ধ। ঈদের সময় এক শ্রেনির যুবকদের বিনোদনের নামে ট্রাক/পিকআপ নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। আমরা যেখানেই তাদের পেয়েছি, সেখান থেকেই ফিরিয়ে দিয়েছি। মহাসড়কে আমাদের টহল অব্যাহত রয়েছে।'