(দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা-মাড়াই। চলতি মৌসুমে বোরো ধানের ফলন বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে। যতোদুর চোখের দৃষ্টি যায় সেদিকেই তাকালে দেখা যায় দোল খাচ্ছে কৃষকের ¯^প্ন। এ ¯^প্নকে ঘরে তুলতে শুরু করেছেন কৃষকেরা। অনেকেই ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজে। যেন ¯^প্নকে ঘরে তুলতে এতটুকুও ক্লান্তি নেই কৃষাণ-কৃষাণীদের মাঝে। একযোগে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হওয়ায় মজুর সংকট দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় ধান কাটা মেশিন কম থাকায় অতিরিক্ত মূল্যেও পাওয়া যাচ্ছে না মেশিন ভাড়া। অনেকেই হারভেস্টার মেশিন দিয়ে দ্রুত ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিঘাপ্রতি জমিতে ধানের ফলন হয়েছে ৩৫-৪০ মণ। বাজারে নতুন ধানের দামও ভালো রয়েছে। প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকা দরে। কৃষকেরাও এতে খুশি। তারা বলছেন এ মৌসুমে কালোবৈশাখী ঝড়সহ বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগ হয়ে থাকে। সময়মতো ধান ঘরে তুলতে না পারলে বড় ধরণের ক্ষতির শিকার হতে পারে। এজন্য সকলে একযোগে ধান কাটা-মাড়া করে চায়। ফলে বোরো মৌসুমে মজুর সংকট তীব্রভাবে দেখা দেয়। উপজেলার নশরতপুর গ্রামের মো. উজ্জ্বল জানান, এ মৌসুমে কালোবৈশাখী ঝড়সহ বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগ হয়ে থাকে। সময়মতো ধান ঘরে তুলতে না পারলে বড় ধরণের ক্ষতির শিকার হতে পারে। ফতেজংপুর গ্রামের কৃষক মো. বাদল বলেন, ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে কালোবৈশাখীর মেঘের গর্জন, এতে দুশ্চিন্তায় আছি। বাজারে ধানের দামও ভালো রয়েছে। তবে শ্রমিকের মজুরি বেশি। এক বিঘা জমি কাটা-মাড়াই করতে শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে ৫-৭ হাজার টাকা। আলোকডিহি গ্রামের কৃষক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছি। জমির ধান পাকায় গত রবিবার এলাকার ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে ধান কাটা শুরু করেছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ¶েতের ধান ভালো হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে এবার বোরো আবাদের ল¶্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৪৯০ হেক্টর। ধানের বর্তমান অবস্থা খুব ভালো। ধানের উৎপাদন ল¶্যমাত্রা ১ লাখ ৩০ হাজার ৬৩ টন এবং চালের ল¶্যমাত্রা ৮৫ হাজার ৮৪২ মে. টন। উপজেলায় চালের বার্ষিক চাহিদা ৫৯ হাজার ১১৫ মে. টন। গতবছর আমন চালের উৎপাদন ৯১ হাজার ১১৮ মে. টন। আউশে চালের উৎপাদন ২ হাজার ৩৬ মে. টন। তিনি আরো বলেন, এ বছর বোরো হাইব্রিড এসএল-৮ প্রণোদনা ৬ হাজার ১৪০ জন কৃষক এবং উচ্চফলনশীল জাতের প্রণোদনার ২ হাজার ৩৬০ জন পেয়েছেন। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের প্রশি¶ণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মাঠে গিয়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কৃষকরা বাম্পার ফলন পাবে বলে আশা করছি।