মোস্তাফিজুর রহমান
জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ।
ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের ম’র’দে’হ উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা গেছে
ভাড়া ফ্ল্যাটে খুন করা হয় এমপি আনারকে
বুধবার (২২ মে) কলকাতার নিউটাউন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে স্থানীয় পুলিশ নিশ্চিত করেছে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে তারা।
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় গিয়ে উত্তরের বরানগরে বন্ধুর বাড়িতে ছিলেন আনার। ১৩ মে তিনি কারও সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু আর ফেরেননি।
পুলিশের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কলকাতা২৪ জানিয়েছে, আনারের শেষ মোবাইল লোকেশন মিলেছিল বিহারে। গত ১৪ মে থেকে তার ফোন বন্ধ হয়ে যায়। গত আট দিন ধরে নিখোঁজ থাকলেও তার ফোন থেকে পরিবারের সদস্যদের কাছে মেসেজ পাঠানো হয় যে তিনি নয়াদিল্লি চলে গেছেন।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৩ মে নিউটাউনের একটি বাড়িতে যান এমপি আনার। সেই বাড়িতেই খুন করা হয় তাকে।
পুলিশের বরাতে কলকাতা২৪ জানিয়েছে, নিউটাউনে যে বাড়িতে তিনি গিয়েছিলেন সেটা একজন এক্সাইজ অফিসারের। ভাড়া নেয়া বাড়িতে খুন করা হয়েছে এমপি আনারকে। খুনের দিন এই বাড়িতে নাকি নারীসহ একাধিক লোকজন ছিলেন। কিন্তু আনারের রহস্যজনক মৃত্যুর পর সবাই ভারত থেকে পালিয়ে গেছেন।
মো. আনোয়ারুল আজিম আনারের জন্ম ৩ জানুয়ারি ১৯৬৮ সালে। পেশায় ব্যবসায়ী আনার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে তিনি তৃতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।তবে,
তদন্ত সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দারা প্রাথমিকভাবে এমপি আনারের নিখোঁজ রহস্যের সাতটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিলেন বলে জানা গেছে।
প্রশ্নগুলো হলো-
প্রশ্ন ১: একজন সংসদ সদস্য কেন সঙ্গীহীন ভারতে এলেন?
প্রশ্ন ২: তার সঙ্গে কেন মাত্র একটি হ্যান্ডব্যাগ ছিল?
প্রশ্ন ৩: সীমান্ত অতিক্রম করার সময় কে ধারণ করল ১ মিনিটের ভিডিও?
প্রশ্ন ৪: কার গাড়িতে বরাহনগর থেকে উঠে গেলেন এমপি আনার?
প্রশ্ন ৫: ফোনে কথা না বলে যে ক্ষুদে বার্তা দিলেন সেটা কি আদৌ তার লেখা?
প্রশ্ন ৬: আট দিন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর মাত্র দুদিন মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাক করা সম্ভব হয়। পরে হঠাৎ কেন ট্র্যাক করা যাচ্ছে না?
প্রশ্ন ৭: চলমান নির্বাচনের সময়ে হঠাৎ কেন ভারতের এলেন তিনি?
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল
বুধবার (২২ মে) ধানমন্ডির বাসভবনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান যে,
এমপি আনার খুনের ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্ত চলছে। তদন্তের স্বার্থে বেশি কিছু বলা যাবে না।
কলকাতার একটি বাসায় তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। কারা খুনের সাথে জড়িত, খুনের মোটিভ জানতে ভারতীয় পুলিশ ও আমাদের পুলিশ কাজ করছে, আন্তর্জাতিকভাবে যেসব পন্থা অবলম্বন করা প্রয়োজন আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
মন্ত্রী আরও বলেন, ঝিনাইদহ সন্ত্রাসকবল এলাকা। আনার এবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার পরই খুনের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের পুলিশ এটা নিয়ে তদন্ত করছে। আমরা শিগগিরই খুনের মোটিভ কী ছিল জানাতে পারব। আমরা আরও যখন তথ্য পাবো তখন বিস্তারিত জানাতে পারব।
মরদেহ পাওয়া গেছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে আমরা এখনই আমাদের কাছে থাকা তথ্য প্রকাশ করছি না। কেন খুন হয়েছে, কোথায় খুন হয়েছে, কারা জড়িত তদন্ত শেষে আমরা সবই জানাব। মরহে এখনও আমাদের হাতে আসেনি।
Leave a Reply