আলী হোসেন,বেলাব(নরসিংদী) প্রতিনিধি
বেলাব মরজাল সড়কের উপর প্রায় এক সপ্তাহ ধরে স্থানীয় একটি ফিড মিলের প্রায় অর্ধশত পণ্যবাহী ট্রাক রাখার কারনে সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ যানজট। এ যানযটের কারনে জনদূর্ভোগ বর্তমানে চরমে পৌছেছে। অনদিকে প্রতিদিনই ১৫/২০ টন মালামাল নিয়ে এসব ট্রাক চলাচল করার কারনে দেবে যাচ্ছে বেলাব টু মরজাল ও ধুকুন্দি টু উজিলাব এলাকার আঞ্চলিক সড়ক দুটি। সপ্তাহব্যাপী ধরে সড়কে বে-আইনী ভাবে এসব ট্রাকের সারি রেখে যানযট সৃষ্টি করলেও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছেনা কোন পদক্ষেপ।
এলাকাবাসি জানান,উপজেলার আমলাব ইউনিয়নের ধুকুন্দি কালিয়ার মোড় নামক স্থানে পিয়ার এন্ড সন্স ফিড নামে একটি প্রতিষ্ঠান হয় প্রায় ১০ বছর পূর্বে। দীঘদিন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি ফিড মিলটি চালু করে মালিক পক্ষ। চালু করার পরই প্রতিদিন গড়ে এ কারখানায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মালামাল নিয়ে আসে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টি ট্রাক। মালবাহী এসব ট্রাক প্রতিদিনই মরজাল টু বেলাব সড়কের পাহাড় উজিলাব নামক স্থানে আঞ্চলিক সড়কটির উপরে অবৈধ ভাবে পার্কিং করে রাখে। ফলে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ যানযট। প্রতিদিনের এসব যানযটে বিভিন্ন এলাকার যাত্রী সাধারণ,স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ বেড়েই চলছে।
সরেজমিনে পাহাড় উজিলাব গ্রামে গিয়ে দেখা যায়,মরজাল টু বেলাব সড়কে রাখা আছে প্রায় অর্ধশত মালবাহী ট্রাক রাখা আছে। এসব ট্রাক রাখার কারনে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানযট। আটকে পড়েছে মালবাহী অন্যান্য ট্রাক লড়ি,রিক্সা ভ্যান,সিএনজি অটোরিক্সা,স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে ধুকুন্দি ও পাহাড় উজিলাব রাস্তাটির অবস্থাও অত্যান্ত নাজুক হয়ে পড়েছে। ছোট এই আঞ্চলিক রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিনই ফিড মিলের একাধিক মালবাহী ট্রাক আসা যাওয়ার কারনে রাস্তার বেশকিছু অংশ দেবে যাচ্ছে। কয়েকমাস আগে সংস্কার হওয়া এ রাস্তাটি বর্তমানে মিলের ট্রাকের কারনে দেবে যাওয়ায় স্থানীয় প্রকৌশলী অফিসের কোন তদারকি নেই বলে জানান এলাকাবাসি।
মাইক্রো গাড়ি দিয়ে পোড়াদিয়া গ্রামের সবুজ মিয়া তার অসুস্থ ভাই সোহরাবকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়ার পথে উজিলাব স্থানে যানযটে আটকে পড়েন প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে। তিনি জানান,৩ ঘন্টা যানযটে আটকে আছি কিন্তু এখনো যানযট বেড়েই চলছে। ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কোন লোকও এখানে নেই যে যানযট মুক্ত করবে। আমার ভাইয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিতে হবে।
স্থানীয় সাংবাদিক রেজাউল আলম বিপ্লব বলেন,ধুকুন্দি টু উজিলাব কিছুদিন আগে মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে ফিড মিলের অসংখ্য ট্রাক যাতায়াতের করার কারনে রাস্তাটির অনেক জায়গায় দেবে গিয়েছে।
পিয়ার এন্ড সন্স ফিড মিলে গিয়ে মালিক পক্ষের কাউকে না পেয়ে কথা হয় মিলের দায়িত্বে থানা আবুল বাশার ও মোঃ খোকা মিয়ার সাথে,তারা জানান ট্রাকের কারনে সড়কের যে ক্ষতি হচ্ছে মালিক পক্ষ হয়তো ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা মেরামত করে দিবে।
সি এন জি চালক নজরুল ইসলাম বলেন - দীর্ঘ অপেক্ষার পর রাস্তাটি সংস্কার হয়, কিন্তু গত কয়েকদিনে এই রোড জ্যাম থাকার কারনে যাত্রী কমে যায় অর্ধেক ,তাই আমাদের সংসার চালানো ও কষ্টকর হয়ে পড়েছে ।
উজিলাব এ আর সুফিয়া বাতেন ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেনীর ছাত্র জহির বলে এই রাস্তাটি আমাদের স্কুলের মূল প্রবেশদ্বারে, এর সামানেই সারি সারি ট্রাক দাড়িয়ে আছে যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে দূর্ঘনা, কারন প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা ও এই রাস্তা দিয়ে আসা যাওয়া করে ।
আমলাব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল হাসান ভূইয়া বলেন,আমার মালিকপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। তারা বলেছে মালামাল আনার কারনে সড়কের যে ক্ষতি হচ্ছে তা মেরামত করে দিবেন।
মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে ফিড মিলটির মালিক মাকসুদুর রহমান সিকদারকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি সাংবাদিক আসার খবর শুনে আর ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সামসুল হক ভূইয়া বলেন,এসবে রাস্তা দিয়ে হাই লোডের ট্রাক ঢুকা সম্পূর্ণ অবৈধ। দেবে যাওয়া রাস্তা আমরা দেখেছি। ব্যাপারটি স্থানীয়ভাবে বাধা দিয়ে ব্যর্থ হলে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতা চাইলে আমরা অবশ্যই সহযোগীতা করবো।
বেলাব থানার ওসি মোঃ তানভীর আহমেদ জানান,ফিড মিলটির মালিকের সাথে আমার কথা হয়েছে। উনি বলেছেন পাশ্ববর্তী শিবপুর এলাকায় ট্রাক রাখার জন্য জায়গা ভাড়া নেয়া হয়েছে। ঐখানে ট্রাক নিয়ে যাওয়া হবে।