শিবচর (মাদারীপুর)প্রতিনিধি
ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগ দিতে বাড়ি ছাড়ছেন দক্ষিন- পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার হাজার হাজার মানুষ। শনিবার(৭ মে) ভোর থেকে রাজধানীমুখী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় রয়েছে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে। দূরপাল্লার পরিবহনসহ নানা যানবাহনে বোঝাই হয়ে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে এসে নামছেন যাত্রীরা। লঞ্চ, স্পিডবোট এবং ফেরিতে প্রচন্ড চাপ যাত্রীদের। যাত্রীচাপ বেশি থাকায় শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রী নামিয়ে দিয়েই প্রায় যাত্রীশূন্য লঞ্চ ও স্পিডবোট বাংলাবাজার ঘাটে আসছে। প্রতি দশ মিনিট পর পরই একেকটি লঞ্চ ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। লঞ্চগুলোতে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহনের অভিযোগও রয়েছে। বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকেই ঘাটের লঞ্চ, স্পিডবোট ঘাটে যাত্রীদের প্রচন্ড চাপ তৈরি হয়েছে। ফেরিঘাটে রয়েছে ব্যক্তিগত যানবাহনের দীর্ঘ সিরিয়াল। এছাড়াও মাঝিরকান্দি ঘাটেও অসংখ্য যানবাহনের চাপ রয়েছে বলে জানা গেছে। দুই ঘাট মিলিয়ে নৌরুটে ১০ টি ফেরি চলছে। যানবাহনের বাড়তি চাপ থাকায় ঘাট এলাকায় ফেরিতে উঠতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে যানবাহনকে। ব্যক্তিগত গাড়ি, পিকআপ, অ্যাম্বুলেন্স এর পাশাপাশি প্রচুর সংখ্যক মোটরসাইকেল পার হচ্ছে ফেরিতে। বাংলাবাজার ফেরিঘাট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে কেটাইপ ফেরি কুমিল্লা, কুঞ্জলতা, ক্যামেলিয়া, বেগম সুফিয়া কামাল, রোরো ফেরি বেগম রোকেয়া ও এনায়েতপুরিসহ মোট ৬ টি ফেরি বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে চলাচল ২৪ ঘন্টা চলছে। এছাড়া ২ টি ফ্ল্যাট ফেরিসহ চারটি ফেরি শরিয়তপুরের মাঝিরকান্দি ঘাট দিয়ে চলাচল করছে। ফেরি কম থাকায় ঘাট এলাকায় যানবাহনের বেশ চাপ তৈরি হয়েছে। সিরিয়ালে দুই/তিন ঘন্টা পর্যন্ত আটকে থাকতে হচ্ছে চালকদের। ঢাকাগামী প্রাইভেটকারের চালক মো.জসিম বলেন,'ঘাটে বেশ চাপ। সবাই একসাথে যাচ্ছে। ঘাটে ফেরি কম থাকায় দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হচ্ছে।' বাংলাবাজার লঞ্চঘাট সূত্রে জানা গেছে, নৌরুটে লঞ্চে যাত্রীদের চাপ সবচেয়ে বেশি রয়েছে। শুক্রবার ভোর থেকেই লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের অধিক চাপ। ধারন ক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রী পারাপারে বিআইডব্লিউটিএ এবং উপজেলা প্রশাসন ঘাটে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। বেশি যাত্রী যাতে একত্রে না উঠতে পারে সেজন্য দ্রুত লঞ্চ ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে স্পিডবোটে যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা স্পিডবোটে উঠছেন। নৌরুটে নিবন্ধিত দেড়শতাধিক স্পিডবোট রয়েছে। শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রী নামিয়ে দিয়েই স্পিডবোটগুলো বাংলাবাজার ঘাটে ফিরে আসছে। ঢাকাগামী যাত্রী মো. তানিম হোসেন বলেন,'ঈদের ছুটি শেষ হয়েছে। তাই ফিরে যাচ্ছে রাজধানীতে। লোকজনের প্রচুর চাপ রয়েছে যানবাহন এবং নৌযানে। ইনশাআল্লাহ আগামী কুরবানির ঈদে আবার বাড়ি যাবো।' আরেকযাত্রী ফারহানা আক্তার বলেন,'পদ্মাসেতু চালু থাকলে ঘাটের দূর্ভোগ পোহাতে হতো না। সুবিধামতো সময়ে রওনা দিয়ে নির্বিঘ্নে ঢাকা যেতে পারতাম। এখন যানবাহনে বাড়তি ভাড়া, যাত্রীদের ভিড় মাথায় নিয়ে ছুটতে হচ্ছে।' বিআইডব্লিউটিসি'র বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো.সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন,'ঈদের ছুটি শেষে ঘাটে যানবাহনের চাপ থাকা স্বাভাবিক। তবে যাত্রীদের যাতে ভোগান্তি না হয় সেদিক বিবেচনা করে সিরিয়াল মেনে ফেরিতে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। রাত-দিন ফেরি চলছে।' বিআইডব্লিউটিএ'র বাংলাবাজার লঞ্চঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন জানান,'শুক্রবার ভোর থেকেই লঞ্চে যাত্রীদের চাপ রয়েছে। ধারন ক্ষমতার বেশি যাত্রী বহন করতে দেয়া হচ্ছে না। রাত ১০ টা পর্যন্ত লঞ্চ চলবে।'