স্টাফ রিপোটার- কুমিল্লা
কুমিল্লায় তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত সাংবাদিকের মায়ের কান্না থামেনি এখনো। তবে হত্যাকান্ড ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার নাঈম কিলিং মিশনে সরাসরি জাড়িত থাকা আসামীদের বেশ কয়েকজনকে সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লা নগরীসহ নিজ নিজ এলাকায় দেখা গেছে, বাড়িতে ঈদও করেছে। সাংবাদিক নাঈম হত্যাকান্ডের তিন দিন পর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সদরের গোলাবাড়ি সীমান্ত এলাকায় র্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে প্রধান আসামী শীর্ষ অস্ত্র ও চোরাকারবারি রাজু নিহত হয়। ঘটনার পর বাহিনীর অন্যতম সদস্যরা গাঁঢাকা দিলেও ঈদের আগের দুএকদিন আগে থেকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে বেশ কয়েকজনকে। এদের কয়েকজন প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে এলাকায়। বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকিও দিচ্ছে নিহত সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার নাঈম এর সহকর্মী সাংবাদিকদের। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নিহত সাংবাদিক মহিউদ্দিনের পরিবার এবং সহকর্মীরা। ভারত সীমান্ত থেকে মাদক সেবন করে এসে হায়দ্রাবাদ এলাকায় বিজিবি মাচার সামনে মহিউদ্দিনকে গুলি করে মাটিতে ফেলে দেয়ার পর রক্তাক্ত দেহের ওপর নির্যাতিন চালিয়ে উল্লাস প্রকাশ করা জুয়েল, মহসীন, এমরানসহ কিশোর গ্যাং সদস্যরা এলাকায় প্রকাশ্যে বিচরণ করায় উদ্বেগ ও ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সহকর্মী ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। অবিলম্বে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সাংবাদিক হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার, কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জানিয়েছেন বিএমএসএফসহ সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
ঘটনাস্থল, বিভিন্ন এলাকা ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে বিএমএসএফের গত ১৫দিনের অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য, যাচাই বাছাই করে জড়িতদের বিষয়ে গুরত্বপূর্ণ আরো তথ্য পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল বিকেলে বড় ধরনের মাদক পাচারকারী ও চোরাচালানের তথ্য দেয়ার কথা বলে কৌশলে ডেকে নিয়ে কুমিল্লা বুড়িচং সীমান্তের হায়দ্রাবাদ এলাকায় সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকারকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
সাংবাদিক হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সকল আসামীকে দ্রুত গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হলে সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচীসহ জোড়ালো আন্দোলনে নামবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) এর কেন্দ্রীয় সভাপতি সোহেল আহমেদ সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক খান। এব্যাপারে বুধবার বিএমএসএফের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর গণমাধ্যমকে বলেন , মহিউদ্দিন হত্যাকান্ডের ঘটনা পর্যবেক্ষনের জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করে দেয়া হয়েছে। গঠিত টিমের সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে সকল তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছেন। আমাদের টিমের সদস্যরা মনে করছেন পুলিশ-র্যার স্বোচ্চার রয়েছেন, তবে এখনই বাকি আসামীদের গ্রেফতার করা উচিৎ। নয়তো ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সংবাদকর্মীরা আরো ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার, সোমবার নিহত সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার নাঈম এর বাড়িতে জেলা পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার নিয়ে দেখা করেন তার বাবা ও মায়ের সাথে। এসময় তাদের শারীরিক ও পারিবারিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন। এসময় সাংবাদিক সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, সাংবাদিক হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। ঘটনার সাথে জড়িতদের সকলকে গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।