নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নরসিংদী জেলাধীন বেলাব উপজেলার নারয়নপুর সরাফত উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে চলমান কমিটির পরবর্তি কমিটির দাতা সদস্য নির্বাচনের জন্য সদস্য ফি গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যপক অনিয়ম, অসদাচরণ ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছে চলমান কমিটির নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যগণ ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য মোঃ খোরশেদ আলম। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির প্রবিধানমালা ২০০৯ এর ৭ ও ৮ নং প্রবিধান মোতাবেক ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ ১ম সভা থেকে পরবর্তি ২ বছর পর্যন্ত কার্যকর খাকিবে মর্মে উল্ল্যেখ আছে। সেই মর্মে নারায়নপুর সরাফত উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযোগকারীদের কমিটি ১৫/১১/২০১৭ ইং তারিখে গঠিত হয় এবং ১৫/১১/২০১৯ ইং তারিখ পর্যন্ত ২ বছর মেয়াদ পূর্ণ হবে। শিক্ষাবোর্ডের প্রবিধানমালা ২০০৯ এর ২(ছ) অনুসারে মহানগর ব্যতীত অন্য এলাকায় অবস্থিত বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণের অন্তত ১৮০ দিন পূর্বে প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে নগদ বা চেকের মাধ্যমে এককালীন ২০ হাজার দান করেছে এমন ব্যক্তি দাতা সদস্য হবার যোগ্য হবেন। কিন্তু উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চলমান কমিটির মেয়াদ পূর্ণ হবার ২১৫ দিন পূর্বে ১০/০৪/২০১৯ইং তারিখের মধ্যে অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে দাতা সদস্য হবার জন্য এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন যেখানে ১৮/০৪/২০১৯ইং তারিখে বিকাল ৪টার মধ্যে দাতা সদস্য হবার দিন নির্ধারণ করে দেন যা শিক্ষাবোর্ডের প্রবিধান ২০০৯ এর ২(ছ) এর পরিপন্থি। অভিযোগকারীগণ আও উল্ল্যেখ করেন যে, ১৮/০৪/২০১৯ ইং তারিখ বিকাল ৩.১০ ঘাটিকার সময় তারা সভাপতির উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে উপস্থিত হয়ে দাতা ভোটার হবার শর্তে উল্ল্যেখিত পরিমান টাকা নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে অনুরোধ করলে তিনি নানন তালবাহানা শুরু করে কালবিলম্ব করতে থাকেন। প্রধান শিক্ষকের পছন্দের প্রার্থীদের কাছ থেকে দাতা সদস্য ফি গ্রহন করার পর বিকাল ৪টা বাজলে প্রধান শিক্ষক দাতা সদস্যের নির্ধারিত টাকা নিতে অস্বীকৃাত জানান। বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষককে বাব বার অনুরোধ করার পরও তিনি তাদের টাকা নিতে প্রথমে রাজি হননি। এতে দাতা সদস্যপ্রার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরন করা হয়েছে। পরক্ষনে সভাপতি ১০ মিনিট সময় চাইলে প্রধান শিক্ষক রাজি হয় কিন্তু তখন অভিযোগকারীরা আর দাতা সদস্য হবার ফি জমা দেন নাই। তাই অভিযোগকারীগণ গত ১৮/০৪/২০১৯ ইং তারিখে উপজেলা নির্বহিী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা সমাজ সেবা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন। উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার ২৮/০৪/২০১৯ তারিখে শুনানী করার পরও কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন কীনা এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য নেয়। এছাড়া নিরুপায় হয়ে অভিযোগকারীরা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করার করিলে শিক্ষা বোর্ড থেকে জেলা শিক্ষা অফিসার নরসিংদীকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন। সরেজমিনে তদন্তের পর নরসিংদীর জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ সৈয়দ উদ্দিন একটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেন। এ তদন্ত প্রতিবেদনে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ২১৫ দিন পূর্বে দাতা সদস্য টাকা গ্রহণ করা বিধি বহিঃর্ভূত বলে উল্ল্যেখ করেন। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য বলে স্বীকার করেন। তাই জেলা শিক্ষা অফিসার ১০/০৪/২০১৯ তারিখে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে পূনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দাতা সদস্য নেওয়ার প্রস্তাব করেন। গত ৩০/০৯/২০১৯ ইং তারিখে দাতা সদস্য প্রার্থী ১০ জন বাদী হয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও প্রধান শিক্ষককে বিবাদী করে বিজ্ঞ বেলাব সহকারী জজ আদালত, নরসিংদীতে একটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। সকল শুনানী শেষ হয়েছে। মামলাটির রায় এখন প্রক্রিয়াধীন। উক্ত বিদ্যালয়ের বিদ্যাৎসাহী সদস্য মোঃ খোরশেদ আলম বলেন প্রধান শিক্ষক শিক্ষাবোর্ডের বিধি লঙ্ঘন করে নিজের পছন্দ মত ব্যক্তিদের দাতা সদস্য করার পিছনে কোনো অর্থনৈতিক লেনদেন আছে কিনা তা তদন্ত করে বের করার জোড়ালো দাবী জানান। তাছাড়া বিদ্যালয়ের সভাপতির আদেশ অমান্য করে তার ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার্থে শিক্ষাবোর্ডের আইনকে তোয়াক্কা না করে একরোখা সিদ্ধান্ত বিদ্যালয়ের জন্য অমঙ্গল বয়ে আনবে। এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ আতাউর রহমান বি.এস.সি বলেন, প্রধান শিক্ষক অভিযোগকারীদের সাথে অন্যায় করেছে এবং এই দাতা সদস্য নির্বাচনে পক্ষপাতিত্ব করেছে। প্রধান শিক্ষককে জরুরী সভা ডাকার আহবান করার পরেও তিনি আমাদের কখা রাখেননি। কেননা আভিযোগকারীরা ৩.১০ মিনিটে অফিসে উপস্থিত হয়েছে। উনার উচিত ছিলো তাদের ফি জমা নেওয়া। আমি প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করার পরও আমার কথা শুনেন নি। আমি প্রধান শিক্ষকের কাছে ১০ মিনিট সময় চেয়েছিলাম তিনি সেই ১০ মিনিট সময় দিতেও রাজি হননি। পরে আবার রাজি হলেও অভিযোগকারীরা দাতা সদস্য ফি জমা দেয়নি। এ অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন তিনি সরকারী বিধি বহিঃর্ভূত কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।
Leave a Reply